কবর জিন্দেগী

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
   
 বিষয় ✍ যখন কবরে রাখা হবে।
📜আনাস ইবনে মালিক  (রা.)  বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয় এবং তার সঙ্গীগণ সেখান হ’তে ফিরতে থাকে, তখন সে তাদের পায়ের শব্দ শুনতে পায়। তাদের ফিরে যেতে না যেতেই তার নিকট দু’জন ফেরেশতা চলে আসেন এবং তাকে উঠিয়ে বসান। তার পর নবী করিম (সা.) -এর প্রতি ইশারা করে জিজ্ঞেস করেন তুমি দুনিয়াতে এ ব্যক্তি সম্পর্কে কি ধারণা করতে? মুমিন ব্যক্তি তখন বলে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর দাস এবং তাঁর রাসূল। তখন তাকে বলা হয়, এই দেখে লও জাহান্নামে তোমার স্থান কেমন জঘন্য ছিল। আল্লাহ তোমার সেই স্থানকে জান্নাতের সাথে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তখন সে উভয় স্থান দেখে এবং খুশি হয়। কিন্তু মৃতু ব্যক্তি যদি মুনাফিক বা কাফের হয় তখন তাকে বলা হয়, দুনিয়াতে তুমি এ ব্যক্তি সর্ম্পকে কি ধারণা করতে? তখন সে বলে আমি বলতে পারি না। মানুষ যা বলত আমিও তাই বলতাম, (প্রকৃত সত্য কি ছিল তা আমার জানা নেই)। তখন তাকে বলা হয়, তুমি তোমার বিবেক দ্বারা বুঝার চেষ্টা করনি কেন? আল্লাহর কিতাব পড়ে বোঝার চেষ্টা করনি কেন? অতঃপর তাকে লোহার হাতুড়ি দ্বারা এমনভাবে পিটাতে শুরু করে। পিটানির চোটে সে হাউমাউ করে বিকটভাবে চিৎকার করতে থাকে। আর এত জোরে চিৎকার করে যে, মানুষ ও জিন ব্যতীত সব কিছুই তার চিৎকার শুনতে পায় (বুখারী, মুসলিম, বাংলা মিশকাত হা/১১৯)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মরণের পর মানুষ প্রশ্নের মুখামুখি হবে। প্রশ্নগুলি কি হবে তা নবী করিম(সা.) স্পষ্ট বলে দিয়েছেন এবং তার উত্তরও বলে দিয়েছেন। কবরে যথাযথ উত্তর দিতে না পারলে তার পরিণাম হবে বড় ভয়াবহ। হাতুড়ি দ্বারা কঠিনভাবে পিটানো হবে। তখন সে বিকট শব্দ করে চিৎকার করতে থাকবে। মানুষ এবং জিন ছাড়া জীব-জন্তু, কীট-পতঙ্গ ও জড় বস্ত্ত সব কিছুই শুনতে পাবে।

عَنْ عَبْدِاللهِ بْنْ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اَحَدَكُمْ اِذَا مَاتَ عُرِضَ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ انْ كَانَ مِنْ اَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ اَهْلِ الْجَنَّةِ وَاِنْ كَانَ مِنْ اَهْلِ النَّارِ فَمِنْ اَهْلِ النَّارِ فَيُقَالُ هذَا مَقْعَدُكَ حَتَّي يَبَْعَثَكَ اللهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامةِ.

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর  (রা.)  বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার স্থায়ী স্থানটি সকাল সন্ধায় তার সামনে পেশ করা হয়। সে যদি জান্নাতী হয়, তাহ’লে জানণাতের স্থান তার সামনে পেশ করা হয়। আর যদি জাহান্নামী হয়, তাহ’লে জাহানণামের স্থান তার সামনে পেশ করা হয় এবং বলা হয় এ হচ্ছে তোমার আসল স্থান। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা তোমাকে এখানেই পাঠাবেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১২০)। অত্র হাদীছে বলা হয়েছে, প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় কবরবাসীর সামনে জাহান্নাম বা জান্নাত পেশ করা হয় এবং বলা হয় এটাই তোমার আসল স্থান। তাকে জাহান্নাম দেখিয়ে সর্বদা আতঙ্কিত করা হয়। অথবা জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়।

عَنْ عَائِشَةَ قَالتْ اَنَّ يَهُوْدِيَّةً دَخَلَتْ عَلَيْهَا فَذَكَرَتْ عَذَابَ الْقَبْرِ فَقَالَتْ لَهَا اَعَاذَك اللهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ فَسألَتْ عَائشةُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ عَذابِ القبْرِ فَقَالَ نَعَمْ عَذابُ الْقَبْرِ حَقٌّ قَالَتْ عائشةُ فَمَا رَأيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ صَلَّى صَلَاةً اِلَّا تَعَوَّذَ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ.

আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা এক ইহুদী মহিলা তার নিকট আসল এবং কবরের আযাবের কথা উত্থাপন করে বলল, আয়েশা! আল্লাহ আপনাকে কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা করুন। অতঃপর আয়েশা (রাঃ) রাসূল(সা.) -কে কবরের শাস্তি সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূল(সা.) বললেন, হ্যাঁ, কবরের শাস্তি সত্য। আয়েশা (রাঃ) বলেন, তার পর হ’তে আমি রাসূল(সা.) -কে যখনই ছালাত আদায় করতে দেখেছি। তখনই তাকে কবরের আযাব হ’তে পরিত্রাণ চাইতে দেখেছি’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১২৮)।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পাহাড়পুর রচনা

সোনারগাঁও রচনা

প্রতীক, সংকেত, যোজনী