নবীদের পেশা
নবীদের জীবনের দিকে তাকালে দেখা যাবে তাঁদের অধিকাংশ বস্তুবাদী এই দুনিয়ার কোনও 'সোকল্ড নোবল' পেশায় ছিলেন না। যেমন-
• আদম (আ.) : তিনি ছিলেন কৃষক। চাষ-বাস করতেন।
• শীস (আ.) : পেশায় ছিলেন তাঁতী। তুলো, রেশমগুটি থেকে সুতো কেটে কাপড় বানাতেন। চাষবাস করতেন বলেও জানা যায়।
• ইদ্রিস (আ.) : পেশায় দর্জি। তিনি প্রথম সুঁইয়ের আবিষ্কার ও ব্যবহার করেন। শীস আ. কাপড় বানাতে জানতেন। আর ইদ্রিস আ. তা সেলাই করে জামায় রূপান্তর করেন।
• নূহ (আ.) : তিনি জীবিকার দিক থেকে ছিলেন কাঠমিস্ত্রি ।
• হুদ (আ.) : ব্যবসার সূচনা করেন। পশুপালন করতেন। আধুনিককার অনেকটা মুদি দোকানের মত প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবসা করতেন।
• সালেহ (আ.) : পেশায় ছিলেন গোয়ালা। উটের পালন আর এর দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
• লুত (আ.) : তাঁর সম্প্রদায়ের মত তিনিও ছিলেন চাষী। ইতিহাসেও তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল।
• ইব্রাহিম (আ.) : রাজমিস্ত্রি তথা নির্মাণশ্রমিক ছিলেন। পশুপালনও করেছেন।
• ইসমাইল (আ.) : তিনিও পিতা ইব্রাহিমের মত একই পেশা অবলম্বন করতেন। সেইসঙ্গে শিকারও করতেন। বহুভাষী ছিলেন।
• ইসহাক (আ.) : পেশাগতভাবে ছিলেন মেষপালক, রাখাল।
• ইয়াকুব (আ.) : তিনিও ছিলেন রাখাল।
• ইউসুফ (আ.) : তিনি সরকারি কর্মে নিয়োজিত ছিলেন। কৃষি দফতরের প্রতিষ্ঠাতা ও ঘড়ির আবিষ্কারক।
• আইয়ুব (আ.) : তিনিও ছিলেন কৃষক।
• শুয়াইব (আ.) : তিনিও ছিলেন কৃষক।
• মুসা (আ.) : রাখাল ছিলেন, অন্যের কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
• হারুন (আ.) : পেশায় আমলা ছিলেন।
• দাঊদ (আ.) : জীবিকা নির্বাহ করেছেন কামারের কাজ করে।
• সুলাইমান (আ.) : শাসক ছিলেন।
• যুল-কিফল (আ.) : তিনি পেশায় ছিলেন বেকারি কর্মী। রুটি বানাতেন।
• ইলিয়াস (আ.) : পেশায় তাঁতী, দর্জি আর কৃষিকাজ করেছেন।
• ইউনুস (আ.) : তিনি তাঁর পিতার মতই জেলে ছিলেন। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
• উযাইর (আ.) : পেশাগত জীবনে মালি ছিলেন।
• যাকারিয়া (আ.) : তিনি ছিলেন কাঠমিস্ত্রি।
• ইয়াহিয়া (আ.) : তাঁর পেশা ছিল শিকার ও ফলমূলাদি সংগ্রহ।
• ঈসা (আ.) : তিনি জীবিকা হিসেবে শিকার বেছে নিয়েছিলেন।
• মুহাম্মদ (সা.) : তিনি ছিলেন রাখাল। অন্যের ব্যবসায় কর্মচারী হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
কেবল সুলাইমান , ইউসুফ আর হারুন আ. ব্যতীত বাকিদের জন্য আল্লাহ্ নির্ধারণ করেছেন প্রান্তিক ও দরিদ্র মানুষের জীবিকা। আর এজন্যই ইসলামে নীচু পেশা বলে কোনও ধারণার অস্তিত্ব নাই। পেশার দরুণ কাউকে অবজ্ঞা করাটা গুনাহর কাজ।
প্রকৃতপক্ষে প্রায় সমস্ত নবীর জীবিকা এইরকম হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল তাঁরা যেন সমাজের বঞ্চিত, অবহেলিত আর অনগ্রসর এই শ্রমজীবী মানুষকে পুরোপুরি বুঝতে পারেন। তাঁদের অধিকার ও প্রয়োজনের ব্যাপারে সচেতন থাকেন।
ফলে ইসলামে শ্রমিক ও কর্মচারীর অধিকার, কৃষকের অধিকারের পক্ষে যে স্ট্যান্ড আজ পর্যন্ত অন্য কোনও রাষ্ট্র ব্যবস্থা এর ধারেকাছেও যেতে পারে নাই।
তাই এ মানুষগুলোর অধিকারের প্রতি সচেতন হউন। তাঁদের সম্মান করতে শিখুন। ইকোনোমি বদলেছে। আগে যারা ছিল পশুপালক এখন তারা রিকশা চালায়। মুজুরি খাটে।
নানান ভিডিওতে, ছবিতে দেখলাম এই অঘোষিত লকডাউনের দিনে পেটের দায়ে বেরুনো শ্রমজীবী মানুষদের পেটানো হচ্ছে। আর লোকেরা এতে আমোদ বোধ করছে।
যারা দিন এনে দিন খায়, কেন তারা সব ছেড়েছুঁড়ে আমাদের মত মোবাইল আর টিভি নিয়ে কেন ঘরে বসতে পারে নি তা ভাবুন।
আগে তো খাবার পৌঁছে দিন তাদের কাছে। যে মানুষ উপার্জনের টাকা রাখে টিস্যুর ফেলে দেওয়া প্যাকেটে তাকে মাস্ক না দিয়ে মাস্কের জন্য পেটানোতে আনন্দের কিছু নাই।
এই যে জুলুমের প্রতি আমাদের উৎসাহ আর উদযাপন- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা দেখছেন। সদয় হউন। নিঃসন্দেহে রব্বের দরবারে এর জন্য আমাদের জবাব দিতে হবে।
লেখা: আরজু আহমদ
• আদম (আ.) : তিনি ছিলেন কৃষক। চাষ-বাস করতেন।
• শীস (আ.) : পেশায় ছিলেন তাঁতী। তুলো, রেশমগুটি থেকে সুতো কেটে কাপড় বানাতেন। চাষবাস করতেন বলেও জানা যায়।
• ইদ্রিস (আ.) : পেশায় দর্জি। তিনি প্রথম সুঁইয়ের আবিষ্কার ও ব্যবহার করেন। শীস আ. কাপড় বানাতে জানতেন। আর ইদ্রিস আ. তা সেলাই করে জামায় রূপান্তর করেন।
• নূহ (আ.) : তিনি জীবিকার দিক থেকে ছিলেন কাঠমিস্ত্রি ।
• হুদ (আ.) : ব্যবসার সূচনা করেন। পশুপালন করতেন। আধুনিককার অনেকটা মুদি দোকানের মত প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবসা করতেন।
• সালেহ (আ.) : পেশায় ছিলেন গোয়ালা। উটের পালন আর এর দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
• লুত (আ.) : তাঁর সম্প্রদায়ের মত তিনিও ছিলেন চাষী। ইতিহাসেও তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল।
• ইব্রাহিম (আ.) : রাজমিস্ত্রি তথা নির্মাণশ্রমিক ছিলেন। পশুপালনও করেছেন।
• ইসমাইল (আ.) : তিনিও পিতা ইব্রাহিমের মত একই পেশা অবলম্বন করতেন। সেইসঙ্গে শিকারও করতেন। বহুভাষী ছিলেন।
• ইসহাক (আ.) : পেশাগতভাবে ছিলেন মেষপালক, রাখাল।
• ইয়াকুব (আ.) : তিনিও ছিলেন রাখাল।
• ইউসুফ (আ.) : তিনি সরকারি কর্মে নিয়োজিত ছিলেন। কৃষি দফতরের প্রতিষ্ঠাতা ও ঘড়ির আবিষ্কারক।
• আইয়ুব (আ.) : তিনিও ছিলেন কৃষক।
• শুয়াইব (আ.) : তিনিও ছিলেন কৃষক।
• মুসা (আ.) : রাখাল ছিলেন, অন্যের কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
• হারুন (আ.) : পেশায় আমলা ছিলেন।
• দাঊদ (আ.) : জীবিকা নির্বাহ করেছেন কামারের কাজ করে।
• সুলাইমান (আ.) : শাসক ছিলেন।
• যুল-কিফল (আ.) : তিনি পেশায় ছিলেন বেকারি কর্মী। রুটি বানাতেন।
• ইলিয়াস (আ.) : পেশায় তাঁতী, দর্জি আর কৃষিকাজ করেছেন।
• ইউনুস (আ.) : তিনি তাঁর পিতার মতই জেলে ছিলেন। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
• উযাইর (আ.) : পেশাগত জীবনে মালি ছিলেন।
• যাকারিয়া (আ.) : তিনি ছিলেন কাঠমিস্ত্রি।
• ইয়াহিয়া (আ.) : তাঁর পেশা ছিল শিকার ও ফলমূলাদি সংগ্রহ।
• ঈসা (আ.) : তিনি জীবিকা হিসেবে শিকার বেছে নিয়েছিলেন।
• মুহাম্মদ (সা.) : তিনি ছিলেন রাখাল। অন্যের ব্যবসায় কর্মচারী হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
কেবল সুলাইমান , ইউসুফ আর হারুন আ. ব্যতীত বাকিদের জন্য আল্লাহ্ নির্ধারণ করেছেন প্রান্তিক ও দরিদ্র মানুষের জীবিকা। আর এজন্যই ইসলামে নীচু পেশা বলে কোনও ধারণার অস্তিত্ব নাই। পেশার দরুণ কাউকে অবজ্ঞা করাটা গুনাহর কাজ।
প্রকৃতপক্ষে প্রায় সমস্ত নবীর জীবিকা এইরকম হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল তাঁরা যেন সমাজের বঞ্চিত, অবহেলিত আর অনগ্রসর এই শ্রমজীবী মানুষকে পুরোপুরি বুঝতে পারেন। তাঁদের অধিকার ও প্রয়োজনের ব্যাপারে সচেতন থাকেন।
ফলে ইসলামে শ্রমিক ও কর্মচারীর অধিকার, কৃষকের অধিকারের পক্ষে যে স্ট্যান্ড আজ পর্যন্ত অন্য কোনও রাষ্ট্র ব্যবস্থা এর ধারেকাছেও যেতে পারে নাই।
তাই এ মানুষগুলোর অধিকারের প্রতি সচেতন হউন। তাঁদের সম্মান করতে শিখুন। ইকোনোমি বদলেছে। আগে যারা ছিল পশুপালক এখন তারা রিকশা চালায়। মুজুরি খাটে।
নানান ভিডিওতে, ছবিতে দেখলাম এই অঘোষিত লকডাউনের দিনে পেটের দায়ে বেরুনো শ্রমজীবী মানুষদের পেটানো হচ্ছে। আর লোকেরা এতে আমোদ বোধ করছে।
যারা দিন এনে দিন খায়, কেন তারা সব ছেড়েছুঁড়ে আমাদের মত মোবাইল আর টিভি নিয়ে কেন ঘরে বসতে পারে নি তা ভাবুন।
আগে তো খাবার পৌঁছে দিন তাদের কাছে। যে মানুষ উপার্জনের টাকা রাখে টিস্যুর ফেলে দেওয়া প্যাকেটে তাকে মাস্ক না দিয়ে মাস্কের জন্য পেটানোতে আনন্দের কিছু নাই।
এই যে জুলুমের প্রতি আমাদের উৎসাহ আর উদযাপন- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা দেখছেন। সদয় হউন। নিঃসন্দেহে রব্বের দরবারে এর জন্য আমাদের জবাব দিতে হবে।
লেখা: আরজু আহমদ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন