সত্যবাদিতা ও সততা
সত্যবাদিতা ও সততা
উবায়দুর রহমান খান নদভী |
কোরআন মাজীদ থেকে যেসব চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের বিপুল গুরুত্ব ও মহত্ত¡ প্রতীয়মান হয়, তন্মধ্যে একটি হলো সত্যবাদিতা ও সততা। তাছাড়া কোরআন মাজীদ থেকেই বোঝা যায়, সত্যবাদিতা ও সততার অর্থ শুধু এই নয় যে, মুখেই শুধু ভুল ও বাস্তবতার পরিপন্থী কথা বলবে না এবং সত্য কথা বলবে; বরং এর বলয় অত্যন্ত ব্যাপক।
এতে অন্তরের সত্যতা ও কর্মের সত্যতাও অন্তর্ভুক্ত। অন্তরের সত্যতা হলো, তাতে কোনো রকম মুনাফেকী ও প্রতারণা না থাকা। আর কর্মের সত্যতা হলো, যেমন বিশ্বাস ও কথা থাকবে তেমনি কাজ করা। বাইরে ও ভেতরে পুরোপুরি এক হওয়া। যেসব বান্দার অবস্থা এ ধরনের হবে, তারাই কোরআন মাজীদের পরিভাষায় সত্যবাদী। আর এ বৈশিষ্ট্যে পূর্ণাঙ্গ হলে তাদের বলা হবে সিদ্দীক। আর কোরআন মাজীদের দাওয়াত ও শিক্ষা এই যে, মানুষকে এমনি হওয়া উচিত, এমনি লোকদের সাথে থাকা উচিত, যাতে ‘সৎসঙ্গে স্বর্গবাস’-এর প্রাকৃতিক মৌলনীতি মোতাবেক তারা গঠিত হতে পারে।
সূরা তওবায় ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় করো এবং সাদেকীন (সত্যাবাদী)দের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও।’ (সূরা তওবাহ : আয়াত ১১৯)। ‘সাদাকাত’ তথা সত্যাবাদিতার অর্থের এই ব্যাপকতা সম্পর্কে সূরা বাকারার সেসব আয়াতেও আলোকপাত করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর নেক বান্দা তারাই এবং প্রকৃত নেকী তাদেরই নেকী, যাদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা, আখেরাত দিবস এবং অন্যান্য ঈমান সংক্রান্ত বাস্তবতার ওপর বিশ্বাস থাকবে।
আর এ ঈমান ও বিশ্বাসের কারণে সে নিজের উপার্জিত অর্থ সম্পদ আল্লাহ তাআলার অভাবগ্রস্ত বান্দা, এতিম-অনাথ, গরিব-মিসকিন প্রভৃতির জন্য ব্যয় করবে। ওয়াদা পূরণ করবে এবং ন্যায় ও সত্যের পথে আগত বিপাদাপদ ও কষ্টসমূহ সবর, ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে সহ্য করবে। সেসব বান্দার এ সমুদয় গুণ-বৈশিষ্ট্য বর্ণনার পর সবশেষে বলা হয়েছে, ‘এসব বান্দাই সত্যনিষ্ঠ এবং এরাই মুত্তাকী-পরহেজগার।’ (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১১৭)।
এমনিভাবে সূরা হুজরাতে বলা হয়েছে, ‘আসল মুমিন বান্দা তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে অতঃপর কোনো রকম সন্দেহ সংশয়ে পতিত হয়নি এবং আল্লাহর পথে নিজের জান ও মালের দ্বারা পুরোপুরি চেষ্টা-প্রয়াস চালিয়েছে। শুধু তারাই হলো সত্যিকারের সত্যবাদী বান্দা।’ (সূরা হুজরাত : আয়াত ১৫)।
আর এ কারণেই ‘সিদক’ ও সত্যবাদিতার অর্থে অন্তর ও কর্মের সত্যবাদিতা অন্তর্ভুক্ত। সূরা আহযাবের এক আয়াতে সত্যবাদীদের বিপরীতে মোনাফেকীন (খল) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যাতে আল্লাহ তাআলা সত্যনিষ্টদের তাদের সত্যবাদিতার বদলা ও বিনিময় দান করেন এবং ইচ্ছা করলে মোনাফেকদের শাস্তি দান করেন।’ (সূরা আহযাব : আয়াত ২৪)।
সত্য ও সত্যনিষ্ঠার এ মর্মার্থ এবং এর এই ব্যাপকতা ও গভীরতা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পর আপনা আপনিই এ কথা প্রতীয়মান হয়ে যায় যে, ঈমানের সাথে সাথে সত্য ও সত্যানিষ্ঠার এ বৈশিষ্ট্য যেসব বান্দার ভাগ্যে জুটবে, তারা হলো আল্লাহ তাআলার পূর্ণাঙ্গতর বান্দা। বস্তুত নবী রাসূলগণকে ছাড়া এহেন উচ্চ মর্যাদা কারো নেই।
সে জন্যই কোরআন মাজীদের যেখানে ঈমানদারদের সে চার শ্রেণির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ তাআলার বিশেষ নৈকট্য, গ্রহণীয়তা ও ভালোবাসার বিশেষ স্তর যাদের অর্জিত হয়েছে এবং যাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ আশীর্বাদ বর্ষিত হয়েছে, সেখানে নবী রাসূলদের পর দ্বিতীয় স্থানে সত্যনিষ্টদের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও ফরমাবরদারী করবে, তারা (জান্নাতে) আল্লাহ তাআলার সেসব খাস বান্দাদের সাথে থাকবে, যাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ আনুক‚ল্য রয়েছে। অর্থাৎ, নবী রাসূলগণ, সত্যনিষ্ঠগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মীবৃন্দ। বস্তুত কতই না উত্তম এ সমস্ত সাথী।’ (সূরা নিসা : আয়াত ৬৯)।
এতে অন্তরের সত্যতা ও কর্মের সত্যতাও অন্তর্ভুক্ত। অন্তরের সত্যতা হলো, তাতে কোনো রকম মুনাফেকী ও প্রতারণা না থাকা। আর কর্মের সত্যতা হলো, যেমন বিশ্বাস ও কথা থাকবে তেমনি কাজ করা। বাইরে ও ভেতরে পুরোপুরি এক হওয়া। যেসব বান্দার অবস্থা এ ধরনের হবে, তারাই কোরআন মাজীদের পরিভাষায় সত্যবাদী। আর এ বৈশিষ্ট্যে পূর্ণাঙ্গ হলে তাদের বলা হবে সিদ্দীক। আর কোরআন মাজীদের দাওয়াত ও শিক্ষা এই যে, মানুষকে এমনি হওয়া উচিত, এমনি লোকদের সাথে থাকা উচিত, যাতে ‘সৎসঙ্গে স্বর্গবাস’-এর প্রাকৃতিক মৌলনীতি মোতাবেক তারা গঠিত হতে পারে।
সূরা তওবায় ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় করো এবং সাদেকীন (সত্যাবাদী)দের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও।’ (সূরা তওবাহ : আয়াত ১১৯)। ‘সাদাকাত’ তথা সত্যাবাদিতার অর্থের এই ব্যাপকতা সম্পর্কে সূরা বাকারার সেসব আয়াতেও আলোকপাত করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর নেক বান্দা তারাই এবং প্রকৃত নেকী তাদেরই নেকী, যাদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা, আখেরাত দিবস এবং অন্যান্য ঈমান সংক্রান্ত বাস্তবতার ওপর বিশ্বাস থাকবে।
আর এ ঈমান ও বিশ্বাসের কারণে সে নিজের উপার্জিত অর্থ সম্পদ আল্লাহ তাআলার অভাবগ্রস্ত বান্দা, এতিম-অনাথ, গরিব-মিসকিন প্রভৃতির জন্য ব্যয় করবে। ওয়াদা পূরণ করবে এবং ন্যায় ও সত্যের পথে আগত বিপাদাপদ ও কষ্টসমূহ সবর, ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে সহ্য করবে। সেসব বান্দার এ সমুদয় গুণ-বৈশিষ্ট্য বর্ণনার পর সবশেষে বলা হয়েছে, ‘এসব বান্দাই সত্যনিষ্ঠ এবং এরাই মুত্তাকী-পরহেজগার।’ (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১১৭)।
এমনিভাবে সূরা হুজরাতে বলা হয়েছে, ‘আসল মুমিন বান্দা তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে অতঃপর কোনো রকম সন্দেহ সংশয়ে পতিত হয়নি এবং আল্লাহর পথে নিজের জান ও মালের দ্বারা পুরোপুরি চেষ্টা-প্রয়াস চালিয়েছে। শুধু তারাই হলো সত্যিকারের সত্যবাদী বান্দা।’ (সূরা হুজরাত : আয়াত ১৫)।
আর এ কারণেই ‘সিদক’ ও সত্যবাদিতার অর্থে অন্তর ও কর্মের সত্যবাদিতা অন্তর্ভুক্ত। সূরা আহযাবের এক আয়াতে সত্যবাদীদের বিপরীতে মোনাফেকীন (খল) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যাতে আল্লাহ তাআলা সত্যনিষ্টদের তাদের সত্যবাদিতার বদলা ও বিনিময় দান করেন এবং ইচ্ছা করলে মোনাফেকদের শাস্তি দান করেন।’ (সূরা আহযাব : আয়াত ২৪)।
সত্য ও সত্যনিষ্ঠার এ মর্মার্থ এবং এর এই ব্যাপকতা ও গভীরতা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পর আপনা আপনিই এ কথা প্রতীয়মান হয়ে যায় যে, ঈমানের সাথে সাথে সত্য ও সত্যানিষ্ঠার এ বৈশিষ্ট্য যেসব বান্দার ভাগ্যে জুটবে, তারা হলো আল্লাহ তাআলার পূর্ণাঙ্গতর বান্দা। বস্তুত নবী রাসূলগণকে ছাড়া এহেন উচ্চ মর্যাদা কারো নেই।
সে জন্যই কোরআন মাজীদের যেখানে ঈমানদারদের সে চার শ্রেণির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ তাআলার বিশেষ নৈকট্য, গ্রহণীয়তা ও ভালোবাসার বিশেষ স্তর যাদের অর্জিত হয়েছে এবং যাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ আশীর্বাদ বর্ষিত হয়েছে, সেখানে নবী রাসূলদের পর দ্বিতীয় স্থানে সত্যনিষ্টদের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও ফরমাবরদারী করবে, তারা (জান্নাতে) আল্লাহ তাআলার সেসব খাস বান্দাদের সাথে থাকবে, যাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ আনুক‚ল্য রয়েছে। অর্থাৎ, নবী রাসূলগণ, সত্যনিষ্ঠগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মীবৃন্দ। বস্তুত কতই না উত্তম এ সমস্ত সাথী।’ (সূরা নিসা : আয়াত ৬৯)।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন