হজ্জ কত প্রকার?

হজ্বের প্রকারসমূহ
হজ্ব তিন প্রকার:
১. কিরান
২. তামাত্তু
৩. ইফরাদ
১.কিরান:
কিরান সর্বাধিক ফযীলতপূর্ণ। হজ্বে কিরানের মধ্যে হজ্ব ও উমরার ইহরাম এক সাথে বাঁধা হয় এবং একই সাথে হজ্ব ও উমরার ইহরাম খোলা হয়। উমরার পরে হালাল হওয়া যায় না অর্থাৎ উমরা করার পর মাথার চুল কামানো বা ছাঁটা যায় না এবং ইহরামের সময় নিষিদ্ধ কোনো কাজও করা যায় না। যারা শেষের দিকে যায় তাদের জন্য এই প্রকার হজ্ব করা সহজ।
২. তামাত্তু: কিরানের পর তামাত্তুর ফযীলত বেশি। ‘তামাত্তু অর্থ ফায়িদা হাসিল করা। হজ্বে তামাত্তুর জন্য প্রথমে উমরার ইহরাম বেঁধে মক্কা শরীফ যেতে হয় এবং বাইতুল্লাহ পৌঁছে উমরার কাজ শেষ করে হালাল হয়ে যেতে হয়। এরপর জিলহজ্বের সাত বা আট তারিখে মিনায় যাওয়ার সময় হজ্বের জন্য ইহরাম বাঁধার পূর্ব পর্যন্ত স্বাভাবিক পোশাকে থাকতে পারে। মাঝের এই সময়ে স্বাভাবিকভাবে থেকে ফায়িদা হাসিল করা ( যেমন: সেলাই করা কাপড় পরা, খোশবু ব্যবহার করা, চুল-নখ ইত্যাদি কাটা, স্ত্রীর সাথে মেলামেশা করা।) কেই তামাত্তু বলে। তামাত্তু হজ্বে দুইবার ইহরাম বাঁধতে হয়, দুইবার খুলতে হয়। প্রথমবার উমরার জন্য দ্বিতীয়বার হজ্বের জন্য। তামাত্তু হজ্বকারীর ক্ষেত্রে নিয়ম হলো: মদীনা সফর শেষ করে হজ্বের জন্য মক্কা শরীফ আসা। অথবা প্রথমে মক্কা গিয়ে হজ্বের সব কাজ শেষ করে মদীনায় যাওয়া। কিন্তু আজকাল ট্রাভেলওয়ালারা নতুন একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে, তাহলো, প্রথমে মক্কা শরীফ গিয়ে উমরা করে ২/৪ দিন থেকে তারপর মদীনা চলে যাওয়া। সেখানে আটদিন থেকে হজ্বের পূর্বে মক্কা ফিরে আসা। এই সূরতে তামাত্তুকারীর তামাত্তু হবে কিনা সে বিষয়ে ফুকাহাদের মতবিরোধ রয়েছে। ইমাম আবূ হানীফা (রাহ.) এর মতে এই সূরতে তামাত্তু বাতিল হবে না। আর ইমাম আবূ ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহ.) এর মতে এই সূরতে তামাত্তু বাতিল হয়ে যাবে। তবে মদীনা থেকে ফিরার সময় আবার নতুন করে তামাত্তু বা কেরান করার সুযোগ থাকবে। আর ইমাম আবূ হানীফা রাহ. এর মতে যেহেতু এই সূরতে তামাত্তু বাতিল হবে না, তাই মদীনা থেকে শুধু হজ্বের নিয়তেই মক্কায় ফিরবে। (ইমাদাদুল আহকাম ২/১৮১)
যেহেতু এই সূরতটা মতবিরোধপূর্ণ, তাই ট্রাভেলওয়ালাদেরকে অনুরোধ করে এই সূরত থেকে বেঁচে থাকা ভালো।
৩. ইফরাদ: ইফরাদ হজ্বের ফযীলত কিরান ও তামাত্তুর তুলনায় কম। হজ্বে ইফরাদ অর্থ শুধু হজ্ব করা। মীকাত থেকে শুধু হজ্বের ইহরাম বেঁধে মক্কায় পৌঁছে একটি তাওয়াফ করবে (তাওয়াফে কুদূম যা সুন্নাত)। এরপর হজ্বের কার্যক্রম শেষ হওয়া পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকবে। এ হজ্বে ১০ই জিলহজ্বের পূর্বে কোনো উমরা নেই। উমরা করতে চাইলে হজ্বের কার্যাদি শেষ করার পরে (১৩ই যিলজ্বের পর) করতে পারবে। তবে ১৩ তারিখের পর উমরা করলে ঐ উমরার দ্বারা এই হজ্ব তামাত্তু বা কিরান হবে না। কারণ তামাত্তু বা কিরান হওয়ার জন্য হজ্বের আগে উমরা করা শর্ত।
(রদ্দুল মুহতার ৩/৬৩১রশীদিয়া, মানাসিক ৭৪)

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পাহাড়পুর রচনা

সোনারগাঁও রচনা

প্রতীক, সংকেত, যোজনী