মুরগীর মাংসের পুষ্টিগুণ
মানব দেহে প্রোটিন পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে মুরগির মাংস, অন্যান্য রেডমিটের তুলনায় ফ্যাট কনটেন্ট কম থাকে বলে তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যকর, প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি খাবার হচ্ছে মুরগির মাংস। চলুন আরো কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক মুরগির মাংসের পুষ্টিগুণ আগুন সম্বন্ধে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মুরগির মাংস সংবিধান করলে তা আপনার মেটাবলিজম উন্নত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন পুষ্টির যোগান দিতে পারে। চলুন দেখে নেই মুরগির মাংস আসলে কতটা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য,কেন আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় মুরগির মাংস অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, আর কোথা থেকেই বা আমরা বাজারের সেরা মুরগির মাংস সংগ্রহ করতে পারব।
পুষ্টি গুণাগুণ
মুরগির মাংস প্রোটিনের এক চমৎকার উৎস।আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করতে সক্ষম ভিটামিন এবং মিনারেলে পরিপূর্ণ মুরগির মাংস।একটি হেলদি লাইফ স্টাইল এর পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় মুরগির মাংস যোগ করা সুস্বাস্থ্যের পথে আপনাকে আরো একটি ধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। মুরগির মাংসে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আপনার শরীরের কোলেস্টেরল লেভেল কমাতেও সাহায্য করে। চলুন দেখে আসি ১০০ গ্রাম কাঁচা মুরগির মাংসে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছেঃ
উপাদান | পরিমাণ |
প্রোটিন | ১৪.০৫ গ্রাম |
কোলেস্টেরল | ৭৯ মিলিগ্রাম |
রেটিনোল | ৭৫ মাইক্রো গ্রাম |
ফ্যাট | ২৮.৪ গ্রাম |
সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড | ৮.৩৪ গ্রাম |
অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড | ১৮.৩৯ গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১৩ মিলিগ্রাম |
কপার | ০.০৪৭ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.৯৪ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ১৫ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | ২৫১ IU |
ফসফরাস | ১১৩ মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ১৪৪ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ৬৪ মিলিগ্রাম |
জিংক | ১.২৬ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ১.৬ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি 12 | ০.২৫ মাইক্রোগ্রাম |
০.৩৭ মিলিগ্রাম | |
ভিটামিন কে | ২.৪ মাইক্রোগ্রাম |
সূত্রঃ নিউট্রিশন ভ্যালু
একজন স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন ক্যালরি দরকার হয় গড়ে ২০০০ ক্যালরি। ১০০ গ্রাম ব্রয়লার মুরগির মাংসে প্রায় ১৬৮ ক্যালরি রয়েছে, যা আপনার দৈনন্দিন ক্যালরি চাহিদার ৮%।
কেন খাবো
মুরগির মাংসে থাকা ভিটামিন এ, ডি এবং বি এর মত উপাদান আমাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার কাজে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এর ফলে আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়, হাড় শক্তিশালী হয়, নতুন মাংসপেশি গঠনে সাহায্য হয় এবং সর্বোপরি ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এছাড়াও মুরগির মাংসে থাকা নানা ধরনের অ্যামাইনো এসিড শরীরে অনুপ্রবেশকারী নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য টক্সিক উপাদান থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে।
তুলনামূলকভাবে অন্যান্য রেড মিট এর তুলনায় মুরগির মাংসে ফ্যাট কনটেন্ট বেশ কম। আর তাই আপনার শরীরের মেটাবলিজম উন্নতির পাশাপাশি আপনার বডি ম্যানেজমেন্টে পজিটিভ ফলাফল নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মুরগির মাংস অন্তর্ভুক্ত করা।
প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে মুরগির মাংস খাওয়া আপনার যাবতীয় খনিজ পদার্থের চাহিদাও পূরণ করতে সক্ষম। এতে রয়েছে প্রচুর সেলেনিয়াম, আয়রন এবং ফসফরাস যা আপনার দেহের লোহিত রক্তকণিকা, দাঁত, ব্রেইন, এবং অন্যান্য অঙ্গাণু কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
সম্প্রতি পরিচালিত আরো বেশ কিছু গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, মুরগির মাংসে এন্টিডিপ্রেসেন্ট আছে। মুরগির মাংসে থাকা ট্রিপটোফেন নামক অ্যামিনো এসিড মন-মেজাজ কে প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে থাকে। মুরগির মাংসের মধ্যে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আপনার মেটাবলিজম উন্নত করার পাশাপাশি আপনার হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে ভূমিকা রাখবে। একটি হেলদি লাইফ স্টাইল এর পাশাপাশি প্রতিদিন মুরগির মাংস খাওয়া আপনার কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করতে পারে।
কোথায় পাবো
সাধারণ কাঁচা বাজার অথবা দোকান থেকে কেনা মুরগির মাংস ততটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী পোল্ট্রি মুরগির খাদ্যে রাসায়নিক ভাবে উৎপাদিত উপাদান ব্যবহার করে থাকেন। যার ফলে মুরগির মাংস তার পুষ্টি গুনাগুন হারায়। এ ছাড়া অধিকাংশ পোল্ট্রি ফার্মে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি লালন পালন করা হয়ে থাকে, যার ফলে মুরগির মধ্যে নানা ধরনের রোগ-জীবাণু খুব দ্রুত প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন