মিসওয়াকের ফজিলত
ইসলামের দৃষ্টিতে মিসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত
আমাদের দেশে বর্তমানে প্রায় সবাই দাঁত পরিষ্কার করার জন্য ব্রাশ ব্যবহার করে থাকে। তবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা কিন্তু এখনো মেসওয়াক ব্যবহার করে থাকেন। কারণ ইসলামে মেসওয়াকের আলাদা গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। মেসওয়াকের বিষয়ে ইসলাম কি বলছে, চলুন এবার বিস্তারীত জেনে নিই।
মিসওয়াক কি:
মিসওয়াক হলো গাছের ডাল বা শিকড়। যা দিয়ে দাঁত মাজা ও পরিষ্কার করা হয়। দাঁত মাজাকেও মিসওয়াক বলা হয়।
মিসওয়াকের গুরুত্ব:
মিসওয়াক মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যম, আল্লাহর সন্তুষ্টির উপায়। (বুখারি, নাসাঈ, মিশকাত) অন্য হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এমনটি কখনো হয়নি যে, জিব্রাইল আলাইহিস সালাম আমার নিকট এসেছেন আর আমাকে মিসওয়াকের আদেশ দেননি। এতে আমার আশঙ্কা হচ্ছিল যে, মিসওয়াকের কারণে আমার মুখের অগ্রভাগ ছিলে না ফেলি। (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত)
কি দ্বারা মিসওয়াক করবো-
যেসব গাছের
স্বাদ তিতা সেসব গাছের ডাল দিয়ে মিসওয়াক করা মুস্তাহাব। যায়তুনের ডাল দিয়ে মিসওয়াক করা উত্তম। মিসওয়াক হাতের আঙ্গুলের মতো মোটা ও নরম হওয়া ভালো। লম্বায় হবে এক বিঘাত
মিসওয়াক করার নিয়ম:
মুখের ডানদিক থেকে শুরু করে দাঁতের প্রস্থের দিক থেকে মিসওয়াক করা। দৈঘ্যের দিক থেকে নয়। ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলী মিসওয়াকের নিচে আর মধ্যমা ও তর্জনী মিসওয়াকের ওপর এবং বৃদ্ধাঙ্গুলী দ্বারা এর মাথার নিচ ভালভাবে ধরা। এ নিয়মটি হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রয়েছে।
মিসওয়াক কখন করবো-
অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে, ওজুতে কুলি করার পূর্বে; কোনো কোনো আলিম ওজুর পূর্বে মিসওয়াক করার কথা বলেছেন।
>> নামাজের পূর্বে।
>> ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর।>> কোনো মজলিসে যাওয়ার পূর্বে।
>> কুরআন ও হাদিস তিলাওয়াতের পূর্বে মিসওয়াক করা মুস্তাহাব।
মিসওয়াক করার ফজিলত:
>> হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেন, মিসওয়াক করে যে নামাজ আদায় করা হয়, সে নামাজে মিসওয়াকবিহীন নামাজের তুলনায় সত্তরগুণ বেশি ফজিলত রয়েছে। (বায়হাকি)
>> মিসওয়াকে আল্লাহর রিজামন্দি হাসিল হয়।
>> দারিদ্র্যতা দূর হয়ে সচ্ছলতা আসে এবং উপার্জন বাড়ে।
>> পাকস্থলী ঠিক থাকে ও শরীর শক্তিশালী হয়।
>> স্মরণশক্তি ও জ্ঞান বাড়ে, অন্তর পবিত্র হয়, সৌন্দর্য বাড়ে।
>> ফিরিশতা তার সঙ্গে মুসাফাহা করেন, নামাজে বের হলে সম্মান করেন, নামাজ আদায় করে বের হলে আরশ বহনকারী ফিরিশতারা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
>> শয়তান অসন্তুষ্ট হয়।
>> ফুলসিরাত বিজলীর ন্যায় দ্রুত পার হবেন এবং ডান হাতে আমলনামা পাবেন, ইবাদতে শক্তি পাবে।
>> মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হবে, জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হবে এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা হবে। পূত-পবিত্র হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন