তারাবীর নামায বিশ রাকাআত
হাদীস ও সুন্নতের আলোকে তারাবীর নামায বিশ রাকাআত
লিখেছেন- মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
“হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত, “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে বিশ রাকাআত তারাবীহ এবং বিতর পড়তেন।”
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ২/২৮৮; আল-মুনতাখাব মিন মুসনাদি আবদ ইবনে হুমাইদ:২১৮, হাদীস ৬৫৩; সুনানে কুবরা, বাইহাকী: ২/৪৯৬; মুজামে কাবীর, তবরানী: ১১/৩১১, হাদীস ১২১০২; মুজামে আওসাত তবরানী : ১/৪৪৪, হাদীস ৮০২
এই হাদীসটিতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবীহ বিশ রাকাআত পড়তেন। লা-মাযহাবী বন্ধুরা এই হাদীস থেকে প্রাণ বাচানোর জন্য দাবী করে বসে যে, হাদীসটি মওযূ। অথচেোন একজন হাদীসের ইমাম বা নির্ভরযোগ্য কোন মুহাদ্দীস হাদীসটিকে মওযূ বলেন নি। বরং সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত পুরো মুসলিম উম্মত- যাতে অসংখ্য ফকীহ, মুহাদ্দিস অতিক্রান্ত হয়েছে- তারা সবাই এই হাদীসের বক্তব্য মোতাবেক বিশ রাকাত তারাবীহ আদায় করেছেন।
জেনে রাখা ভালো যে, উপরোক্ত হাদীসটির ‘মতন’ (বক্তব্য) উসূলে হাদীসের ঐ সব নীতিমালার আলোকে ‘সহীহ লি-গাইরিহী’ পর্যায়ের, যা লা-মাযহাবী ও সালাফী গোষ্টির গন্যমান্য আলেমগণও স্বীকার করেন। বলাবাহুল্য, ‘সহীহ লি-গাইরিহী’ সহীহ হাদীসেরই একটি প্রকার।
দ্রষ্টব্য: আননুকাত, বদরুদ্দীন যারকাশি: ১/৩৯০; আননুকাত, ইবনে হাজার আসকালানী: ১/৪৯৪-৪৯৫, ফতহুল মুগীস, সাখাবী: ১/৩৩৩(বাহসুল মাকলূব); তাদরীবুর রাবী, সুয়ূতী: ১/৬৭-৬৮; আততুহফাতুল মারদিয়্যাহ (মুজামে সাগীর তাবরানী সংযুক্ত), মুহাদ্দিস জাসান ইবনে মুহসিন আনসারী: ১৭৭-১৯৯; ইলাউস সুনান, মুহাদ্দিস হাবীবুর রহমান আযমী: ৫৬-৬৩।
আজকাল লা-মাযহাবীরা বলে বেড়ায় যেম উপরোক্ত হাদীসটি ‘মুওযূ’। যদি হিম্মত থাকে তবে হাদীসের কোন ইমাম বা কোন মুজতাহিদ ইমামের উদ্বৃতিতে হাদীসটি মওযূ প্রমাণ করে দেখাক। দলীল-প্রমাণ ছাড়া শুধূ মুখের কথা গ্রহণযোগ্য নয়।
২. কুরআন কারীমে আল্লাহ তাআলা সাহাবায়ে কেরাম বিশেষত মহাজির ও আনসারের অনুসরণ করার আদেশ করেছেন (নুরা তাওবা: ১০০,১০১); ইলামুল মুওয়াক্কিঈন, ইবনুল কায়্যিম: ৪/৯৪-১১৯; শিয়া সুন্নী ইখতিলঅফাত আওর সিরাতে মুস্তাকীম: ৩২৬-৩৫১) এবং সহীহ হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সুন্নতের সাথে সাথে খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতকেও মজবুতভাবে অবলম্বন করার এবং তাতে অটল থাকার আদেশ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে. “আমার পরে তোমাদের যে ব্যক্তি জীবিত থাকবে সে বহু মতপার্থক্য দেখতে পাবে। এমতাবস্হায় তোমাদের অপরিহার্য হল আমার ও আমার হেদায়েতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নত অনুসরণ করা। তোমরা সুন্নতকে আকড়ে থাক এবং মাড়ীর দাত দ্বারা কামড়ে ধর। আর নবআবিস্কৃত বস্তু থেকে বিরত থাক। কেননা প্রত্যেক নবআবিস্কৃত বস্তুই বেদআত। আর প্রত্যেক বেদআতই গুমরাহী”
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৬; জামে তিরমিযী: ৫/৪৩, হাদীস ২৬৭৬;
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন